বৈধভাবে বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে এগিয়ে আসছে আমাদের দেশের ব্যাংক গুলো। টাকার অভাবে যারা চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারছেন না স্বল্প সুদে লোন দিয়ে ব্যাংক তাদের সহায়তা করবে। তবে শর্ত হলো আপনাকে অবশ্যই কোন চাকুরী নিয়ে বিদেশে যেতে হবে এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তাহলেই ব্যাংক আপনাকে বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন দেবে। লোনের টাকায় বিদেশ গিয়ে চাকরি করে লোন পরিশোধ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। বৈধভাবে চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে উৎসাহ দিতে কিছু ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে। স্বল্প সুদে ও কোনরকম জামানত ছাড়াই এই লোন দেয়া হচ্ছে। যা ইতিমধ্যে বিদেশ যেতে চায় এমন মানুষদের মধ্যে ভালো সাড়া ফেলেছে। বেশ কিছু ব্যাংক এই প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। ৫ টি ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন পাবেন
এখন পর্যন্ত ৫টি ব্যাংক এ প্রকল্প চালু করেছে। ব্যাংক গুলো হলঃ
- ১. প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক,
- সোনালী ব্যাংক,
- অগ্রণী ব্যাংক,
- পূবালী ব্যাংক,
- এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক।
এই ৫ টি ব্যাংক ৯ থেকে ১৪ শতাংশ সুদে এই প্রকল্পে লোন দিচ্ছে। সবনিম্ন ২.৫ থেকে সবচ্চো ৩ লাখ টাকা লোন দেওয়া হচ্ছে। লোনের মেয়াদ ১ থেকে ৩ বছর। লোন প্রদানের শর্তাবলী ব্যাংক গুলোতে প্রায় একই রকম। একবার ভিসা নিশ্চিত হয়ে গেলে, আবেদনকারীকে অবশ্যই ভিসার দুটি ফটোকপি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংক সমস্ত কাগজপত্র যাচাই করে ফোন বা এসএমএসের মাধ্যমে ৩ দিনের মধ্যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকঃ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে “অভিবাসন ঋণ প্রকল্প”। পরিশোধের মেয়াদ ২ বছর। লোনের পরিমান বিভিন্ন দেশে অনুসারে আলাদা আলাদা হয়। সুদের হার ৯%। আপনি যদি সিঙ্গাপুরে যান, আপনাকে লোন পরিশোধের জন্য ১২ মাস সময় দেওয়া হবে।প্রতি মাসে ১ টি করে কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়াও, আপনি যদি অন্য দেশে যান, তবে আপনাকে এই লোন আপনাকে ২ বছরে বা ২২ টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। লোন মঞ্জুর হওয়ার পরে দুই মাসের ছাড় পাবেন। তার মানে আপনাকে প্রথম ২ মাস লোনের কিস্তি দিতে হবে না।
সোনালী ব্যাংকঃ
সোনালী ব্যাংক এই লোন প্রকল্পটির নাম দিয়েছে “প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প”। সর্বোচ্চ লোনের পরিমাণ ৩ লাখ টাকা। সর্বাধিক প্রদানের সময় ৩ বছর। লোনটি ২ বছরে ২৪ কিস্তিতে বা ৩ বছরে ৩৬ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। উভয় মেয়াদে ৩ মাসের গ্রেস পিরিয়ড পাবেন। আপনাকে প্রতি মাসে ১ টি কিস্তি দিতে হবে। সরল সুদের হিসাবে লোনের সুদের হার ১২% অর্থাৎ লোনের সুদের উপর কোন সুদ নেওয়া হবে না। আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মতো করে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে।
অগ্রণী ব্যাংকঃ
অগ্রণী ব্যাংক এই লোন প্রকল্পের নাম দিয়েছে “প্রবাসী ঋণ প্রকল্প”। আপনি সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা লোন পাবেন। সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছরের বাংলাদেশী যেকোনো নাগরিক বিদেশ যাওয়ার জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে ৫০,০০০/- টাকা থেকে ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত ১৫ থকে ১৮ মাসের কিস্তিতে লোন নিতে পারবেন।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকঃ
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে ‘এনআরবি মাইগ্রেশন লোন’। সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা লোন নিতে পারবেন। এখানে সুদের হার ১৪%। ১, ২ ও ৩ বছরে এই লোন পরিশোধ করতে পারবেন। গ্রেস পিরিয়ড পাবেন ৩ মাস। আপনি বিদেশ যাওয়ার ৩ মাস পর থেকে লোনের মাসিক কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে হবে। সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ বছরের বাংলাদেশী যেকোনো নাগরিক লোন নিতে পারবেন।
পূবালী ব্যাংকঃ
পূবালী ব্যাংক এই প্রকল্পটির নাম দিয়েছে ‘নন রেসিডেন্ট ক্রেডিট স্কিম’। সর্বোচ্চ ২.৫ লাখ টাকা লোন নিতে পারবে। লোনের মেয়াদ ২ বছর বা ২৪ মাস। প্রতি মাসে কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। প্রথম ২ মাস গ্রেস পিরিয়ড। এই ব্যাংকে সুদের হার ১৩%। কোনো জামানত লাগবে না।
এই লোন লাভের যোগত্য সমুহঃ
আবেদনকারীর অনুপস্থিতিতে তাকে অবশ্যই তার আত্মীয়-স্বজনদের লোন ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল এমন কোন ব্যক্তিকে এই লোনে পরিশোধের গ্যারান্টি দিতে হবে। একবার ভিসার সত্যতা যাচাই হয়ে গেলে, আপনাকে অবশ্যই ব্যাংক ম্যানেজার এর কাছে লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। লোন নেওয়ার সময়, আবেদনকারীকে একটি সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তার সমস্ত আয় বা রেমিট্যান্স দেশে পাঠাতে হবে। লোন পরিশোধের জন্য অবশ্যই একটি হলফনামা জমা দিতে হবে।
লোনের্ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
লোন আবেদনকারীকে ব্যাংকের নির্ধারিত ফরম পুরন করে স্বাক্ষর দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রের সাথে যে সকল কাগজপত্র লাগবে তা হলঃ
- ১. সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক ইস্যুকৃত আবেদনকারীর নাগরিক সনদপত্র।
- ১ কপি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
- ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি।
- পাসপোর্টের ১ কপি সত্যায়িত ফটোকপি।
- যে দেশে যাবেন সেই দেশের চাকুরীর নিয়োগপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি।
- চাকরির নিয়োপত্রের সত্যতা সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনপত্রের ১ কপি ফটোকপি।
- শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় কর্তৃক আবেদনকারীর পক্ষে ইস্যুকৃত বিদেশ গমনের কমিশন বা সার্ভিস চার্জের বিবরণ সম্বলিত প্রতয়ন পত্র।
আবেদনকারীর মাসিক বেতন থেকে লোনের কিস্তির অর্থের পরিমান ও চাকুরীর মেয়াদ সম্পর্কে শ্রম ও জনশক্তি এবং প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের প্রদান করা গমন পত্র।
লোনের জন্য যেভাবে আবেদন করতে হবেঃ
ভিসা পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লোনের জন্য আবেদন করতে হবে। প্রবাসে যাবার খরচের বিবরন, আবেদনকারীর ৩ কপি, জামানতদারদের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ১ কপি ফটোকপি ও বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা সহ পৌরসভার, ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। এছাড়া নন-জিডিসিয়াল স্ট্যাম্পে যেই ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানো হবে সেই অংগীকারনামও জমা দিতে হবে।
শেষ কথাঃ
এই ৫ টি ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়া বিদেশ যাওয়ার জন্য লোন পাবেন । উপরোক্ত ব্যাংক গুলোর মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিয়ে আপনি প্রবাসে এতে পারবেন। এই লোনের সব থেকে ভাল দিক হল আপনাকে কোন কিছু জামানত রাখতে হবে না। বিনা জামানতে আপনি লোন নিয়ে বিদেশ যেতে পারবেন। চাকরি করে মাসে মাসে টাকা দিয়ে সেই লোন পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন। এই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আমাদের কমেন্ট করুন। আপনার বিদেশ যাত্রা নিরাপদ হোক। ধনবাদ।
আমি কলিং এ নতুন মালোশিয়া যেতে চাচছি,চট্টগ্রামে ফটিকছড়ি থানায় কি নেয়া যাবে কি,প্লিজ জানাবেন?
ReplyDeleteভাই আমি দোহাজারি থেকে সোদি আরব যাব এই কানকার বেংক লোন দিবে
ReplyDeleteজারা পুরোনো প্রবাসে আছে তাদের কে কিবাবে দেয়া হয় লোন না জারা নতুন জাবে সুদু তাদের কেই দেয়া হয় লোন
ReplyDelete